আজ জোহরের নামাজের জন্য অজু করছি এমন সময় খুব ছোট্ট একটি
বাচ্চা ছেলে এসে আমার পাশে দাড়িয়ে কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইল । বাচ্চাটি
এতোটাই ছোট যে তার মাথাটি প্রায় অজুখানার সিমেন্টের আসনের সমান, পার্থক্য এক কি
দুই ইঞ্চি হবে বড়জোর । আমি তার তাকানো দেখে জিজ্ঞেস করলাম, “কিছু বলবা”? আমার কথা শুনে সে কোন উত্তর না দিয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে আমার
পাশের ট্যাপটি ধরে ঘোড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু তার হাত এতোটাই ছোট ও দুর্বল
যে সে ট্যাপটি খুলতে পারলো না । আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, “কি করবা”? তখন সে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় কোন রকম ভাবে বললো, “উযু, আমাজ”। আমি তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললাম, তুমি নামাজ পরবা, তাও আবার হাফপ্যান্ট পড়ে”? সে আমার এই কথার কি অর্থ বুঝল জানি না । আবার একই ভাবে ট্যাপটি ধরে
ঘোড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো আর ভাঙ্গা ভাঙ্গা উচ্চারণে বারবার বলতে লাগলো।, “উযু, আমাজ, উযু, আমাজ, উযু, আমাজ” । এবার আমি
তার ট্যাপটি খুলে দিলাম । সে বড়দের অনুকরণে অজু করার ঢঙ্গে তার হাত পা মুখ ধুতে
শুরু করলো । এই বিষয়টি আমার খুবই ভালো লাগলো সেই সাথে ভাবলাম এতো ছোট একটা বাচ্চা
কিভাবে কোথা থেকে একা একা মসজিদে এলো? তার অজু করা শেষ হলে আমি আবার জিজ্ঞেস
করলাম, “তোমার বাসা কোথায়? কার সাথে এসেছ”? এই কথার
উত্তরে সে আমাকে আঙ্গুল দিয়ে মসজিদের পাশের একটি বাসা দেখিয়ে দিল । এর অল্প
কিছুক্ষণ পরে এক ভদ্রলোককে মসজিদের মেইন গেট দিয়ে ঢুকতে দেখে সে, আবু, আবু, আবু
চিৎকার করতে করতে তার দিকে এগিয়ে গেল ।
সুবাহানাল্লাহ, শিশুরা অনুকরণ প্রিয়, তাই তাদের সঠিক পথে
চালিত করার দায় তার অভিভাবকের । আপনি আপনার কোমলমতি সন্তানটিকে দুনিয়ার ভোগবিলাসের
দিকে পরিচালিত করবেন নাকি তাকে মহান আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) এর জীবনাদর্শ
অভিমুখে পরিচালিত করবেন সে সিদ্ধান্ত আপনার, এই কোমল অন্তঃকরণের শিশুটির মনে আপনি
যে ছাপ ফেলে দেবেন তাই তার মনে স্থায়ী আসন গড়ে নেবে ও তার আগামীর পথ চলায় দিক
নির্দেশনা দেবে । শুধু মনে রাখবেন আপানর সন্তান আপনার কাছে মহান আল্লাহ পাকের
আমানত আর তার সঠিক শিক্ষা ও প্রতিপালনের জন্য আপনাকে একদিন তার দরবারে জবাবদিহিতা
করতে হবে । মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে সঠিক পথের সন্ধান দান করুন । আমিন ।
হাসান ইমতি
অকপট
সত্য যেথা দ্বিধাশূন্য, মুক্ত যেথা বাক ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন