রমাযানের
রাতে রাসূল (সাঃ)এর ইবাদতের অবস্থা ছিল নিম্নরূপ :
১.
প্রথম ২০ রাত রাসূল (সাঃ) পূর্ণ রাত জাগরণ করতেন না। কিছু সময়
ইবাদত করতেন, আর
কিছু অংশ ঘুমিয়ে কাটাতেন। কিন্তু রমাযানের শেষ দশ রাতে তিনি বিছানায় একেবারেই যেতেন না। রাতের পুরো
অংশটাই ইবাদত করে কাটাতেন। সে সময় তিনি কুরআন তিলাওয়াত, সলাত আদায় সদাকা প্রদান, যিকর,
দু‘আ, আত্মসমালোচনা
ও তাওবাহ করে কাটাতেন। আল্লাহর
রহমাতের আশা ও তার গজবের ভয়ভীতি নিয়ে সম্পূর্ণ খুশুখুজু ও বিনম্রচিত্তে ইবাদতে
মশগুল থাকতেন।
২.
হাদীসে আছে ঐ সময় তিনি শক্ত করে তার লুঙ্গি দ্বারা কোমর বেধে নিতেন। এর অর্থ হল,
রাতগুলোতে
তাঁর সমস্ত শ্রম শুধু ইবাদতের মধ্যেই নিমগ্ন ছিল। নিজে যেমন
অনিদ্রায় কাটাতেন তাঁর স্ত্রীদেরকেও তখন জাগিয়ে দিতেন ইবাদত করার জন্য।
৩.
কদরের রাতের ইবাদতের সুযোগ যাতে হাতছাড়া হয়ে না যায় সেজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশদিনের পুরো সময়টাতে ইতেকাফরত থাকতেন। (মুসলিম-
১১৬৭)
রমজানের
রাতসমুহ তথা মহিমান্বিত লাইলাতুল কদরে আমাদের করনীয় ।
রমাযানের
রাতে রাসূল (সাঃ) যেভাবে কাটাতেন এর পূর্ণ অনুসরণ করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য ।এ লক্ষ্যে
আমাদের নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করা আবশ্যক :
(ক)
নিজে রাত জেগে ইবাদত করা এবং নিজের পরিবারস্থ ও অন্যান্যদেরকেও জাগিয়ে ইবাদতে
উদ্বুদ্ধ করা।
(খ)
লম্বা সময় নিয়ে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পড়া। এসব সালাতে কিরাআত ও রুকু-সিজদা লম্বা
করা। রুকু থেকে
উঠে এবং দুই সিজদায় মধ্যে আরো একটু বেশী সময় অতিবাহিত করা, এসময় কিছু দু‘আ আছে সেগুলে
পড়া।
(গ)
সিজদার মধ্যে তাসবীহ পাঠ শেষে দু‘আ করা। কেননা
সিজদাবনত অবস্থায় মানুষ তার রবের সবচেয়ে নিকটে চলে যায়। ফলে তখন দু‘আ কবুল হয়।
(ঘ)
বেশী বেশী তাওবা করবে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়বে। ছগীরা কবীরা গোনাহ থেকে মাফ চাইবে। বেশী করে
শিরক জনিত গোনাহ থেকে খালেছ ভাবে তাওবা করবে। কারণ
ইতিপূর্বে কোন শিরক করে থাকলে নেক আমল তো কবুল হবেই না, বরং অর্জিত
অন্য ভাল আমলও বরবাদ হয়ে যাবে। ফলে হয়ে যাবে চিরস্থায়ী জাহান্নামী।
(ঙ)
কুরআন তিলাওয়াত করবে। অর্থ
ও ব্যাখ্যাসহ কুরআন অধ্যয়নও করতে পারেন। তাসবীহ তাহলীল ও যিকর-আযকার করবেন। তবে যিকর
করবেন চুপিসারে, নিরবে ও একাকী এবং কোন প্রকার জোরে আওয়ায করা ছাড়া। এভাবে যিকর
করার জন্যই আল্লাহ কুরআনে বলেছেন:
“সকাল
ও সন্ধ্যায় তোমার রবের যিকর কর মনে মনে বিনয়ের সঙ্গে ভয়ভীতি সহকারে এবং জোরে আওয়াজ
না করে। এবং কখনো
তোমরা আল্লাহর যিকর ও স্মরণ থেকে উদাসীন হয়োনা।” (আরাফ: ২০৫)
অতএব,
দলবেধে
সমস্বরে জোরে জোরে উচ্চ স্বরে যিকর করা বৈধ নয়। এভাবে
সম্মিলিত কোন যিকর করা কুরআনেও নিষেধ আছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও
তা করেন নি। যিকরের
শব্দগুলো হল: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু
আকবার ইত্যাদি।
(চ)
একাগ্রচিত্তে দু‘আ করা। বেশী বেশী ও বার বার দু‘আ করা। আর এসব দু‘আ হবে একাকী
ও বিনম্র চিত্তে কবুল হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে। দু‘আ করবেন নিজের ও আপনজনদের জন্য,
জীবিত
ও মৃতদের জন্য, পাপমোচন ও রহমত লাভের জন্য, দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের
মুক্তির জন্য। তাছাড়া
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতে নিচের এ দু‘আটি বেশী
বেশী করার জন্য উৎসাহিত করেছেন:
“হে
আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমার আধার, আর ক্ষমা করাকে তুমি ভালবাস। কাজেই তুমি
আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিযী)
হাসান ইমতি
অকপট
সত্য যেথা দ্বিধাশূন্য, মুক্ত যেথা বাক ।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট ।
অকপট
সত্য যেথা দ্বিধাশূন্য, মুক্ত যেথা বাক ।
তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন