শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৩

প্রথম জিসিসি নির্বাচন - সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন, রাত পোহালেই ভোট, অপেক্ষা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের।



প্রথম জিসিসি নির্বাচন

নবগঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) প্রথম নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন, রাত পোহালেই ভোট, অপেক্ষা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের। বৃহস্পতিবারই শেষ হয়েছে প্রচারণা বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ভোটের সরঞ্জামাদিএখন কেবল অপেক্ষা ভোটগ্রহণের এ নির্বাচনে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ নির্বাচনের বিরতিহীন ভোটগ্রহণ এরই মধ্যে ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী এলাকায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে সিটি কর্পোরেশন এলাকায়  গার্মেন্টসসহ সকল ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকবে
 
পরিসংখ্যান

দুটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত দেশের ১১তম সিটি করপোরেশন গাজীপুর সিটির ভোটার সংখ্যা ভোটার সংখ্যা ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জনতাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৭৭ জন ও মহিলা ভোটার ৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৬২ জন

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ৭ জন মেয়র, ১২৮ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং ৪৫৬ জন সাধারণ আসনের কাউন্সিলরসহ মোট ৫৯১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেনগাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি ও ১৯টি রয়েছে সংরক্ষিত (নারী) ওয়ার্ড

নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোট প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান টেলিভিশন এবং ১৪ দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান তালা চাবি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেনমেয়র পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মাওলানা রফিকুল ইসলাম সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন  তবে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েও জাহাঙ্গীর আলমের আনারস প্রতীক থেকে যাচ্ছে ব্যালটেনির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জনতারা হলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ আজমত উল্লাহ খান (দোয়াত-কলম), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান (টেলিভিশন), আমান উল্লাহ (তালা), ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ (ঘোড়া), মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সরকার রুবেল (হাঁস) এবং রিনা সুলতানা (প্রজাপতি)
এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৩৯২টি, যার মধ্যে ২টি অস্থায়ী কেন্দ্র নির্বাচনে ৩৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে  ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণের কাজে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ ৭ হাজার ২৫৯ জন  নির্বাচনী কর্মকর্তা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনতাদের মধ্যে ৩৯২ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২ হাজার ২৮৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ৪ হাজার ৫৭৮ জন পোলিং কর্মকর্তা
 
নির্বাচন প্রস্ততি
 
নির্বাচন কমিশন বলছে, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছেপ্রত্যেক ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছেএরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন সিটি কর্পোরেশনের ভোটারদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দানের জন্য আহ্বান জানিয়েছেআইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীকে নিরপেক্ষ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে
     
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেনির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১২ প্লাটুন সদস্য, ৮৪৭ জন র‌্যাব ও আনসার সদস্যসহ ১১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেনযে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টার টহল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ভোটগ্রহণের জন্য যাবতীয় সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্রগুলোতে আগেই পাঠানো হয়েছে শুক্রবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে অবস্থান গ্রহণ করেন

ভোটকেন্দ্র ছাড়াও পুরো নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসার-ভিডিপি মোতায়েন করা হয়েছেভোট কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকি বিবেচনা করে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ভাগে ভাগ করা হয়েছেসে অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছেসাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসি

এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ব্যাটালিয়ান আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছেমোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটগ্রহণের পর্ববর্তী ২ দিন, ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরবর্তী দিনসহ মোট চার দিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোতায়েন থাকবেপ্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য একটি মোবাইল ফোর্স ও তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে সিটি কর্পোরেশন এলাকায়  পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের সমন্বয়ে ৫৭টি মোবাইল এবং ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবেএছাড়া প্রতি ২টি ওয়ার্ডে একটি টিম করে ৠাবের ২৮টি টিম এবং ১২ প্লাটুন বিজিবি নিয়োগ করা হচ্ছে

নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে ৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছেনির্বাচনী অপরাধীদের সংক্ষিপ্ত বিচারের/তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য সিটি কর্পোরেশনে ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে
 
যানবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা 

নির্বাচনী এলকায় যানবাহন চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে নির্বাচনী এলাকা থেকে দুইদিন আগে থেকেই বহিরাগতদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছেশান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভিজিলেন্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করা হয়েছেনির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যাপক সংখ্যক দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োজিত থাকবেনএছাড়া নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করা হয়েছেবিপুল সংখ্যক সাংবাদিক নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচনী এলাকায় নিয়োজিত থাকবেন।  

ভোটের তথ্য মোবাইলে

ভোটাররা যাতে মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছেOU লিখে স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (১৭ ডিজিট) লিখে 2233 নম্বরে প্রেরণ করতে হবেজাতীয় পরিচয়পত্র ১৩ ডিজিটের হলে প্রথমে জন্ম সাল লিখে পরিচয়পত্রের নম্বর (১৩ ডিজিট)  লিখে 2233 নম্বরে প্রেরণ করতে হবেফিরতি মেসেজে ভোটার নম্বর  ভোটকেন্দ্রের নাম  জানা যাবে। 

ধন্যবাদান্তে, 

হাসান ইমতি

অকপট  
সত্য যেথা দ্বিধাশূন্য, মুক্ত যেথা বাক ।  

থ্যসুত্রঃ অনলাইন নিউজ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন